মানুষের অস্তিত্ব চাক্কীর ন্যায়
মানুষের অস্তিত্ব হল আটা পেষার চাক্কীর ন্যায়। চাক্কীর মধ্যে আটা দেয়া হলে তা পিষে দিবে এবং এর দ্বারা ব্যক্তি উপকৃত হবে। কিন্তু যদি তা শুধু চলতেই থাকে আর আটা না থাকে, তাহলে এর দ্বারা কোন লাভ হল না বরং ক্ষতিই হল। ঠিক তমনিভাবে আমরাও যদি আমাদের শরীরকে ইবাদতে মশগুল রাখি তাহলে তাে আমরা তার দ্বারা উপকৃত হলাম, অন্যথায় শরীর নিষ্ফল পড়ে থাকে।
মানব জীবন বরফের ন্যায়
কোন কোন বুযুর্গ বলেন, মানবদেহ বরফতুল্য। বরফকে পানিতে দিলে তার দ্বারা পানি ঠান্ডা হয় এবং ব্যক্তি উপকৃত হয়। আর পানিতে না দিলেও কিন্তু তা গলে যাবে। কিন্তু তার দ্বারা কোন উপকার হল না। মানব জীবন সম্পূর্ণই এই বরফের মত। আমাদের প্রতি নিঃশ্বাসে একটি করে মুহূর্ত জীবন থেকে বিয়োগ হচ্ছে। প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের এই জীবন ছোট হচ্ছে। মানুষ বলে আমাদের বয়স বাড়ছে। মাশাআল্লাহ অমুকের অত বছর হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তব কথা হচ্ছে, যার বয়স যত বাড়ছে তার হায়াতও তত কমছে। কবি বলেন - 'হে উদাসীন! ঘড়ির কাটা তোমায় ডেকে ডেকে বলছে। ঘড়ির প্রত্যেকটি সেকেন্ড তোমার এই জীবন থেকে একেকটি মুহূর্তকে কমিয়ে দিচ্ছে।’ ঘড়ি মধ্যে ঘন্টা বেজেছে। এর অর্থ হলো, তোমার এই জীবন থেকে আরো একটি ঘণ্টা কমে গেল।
আরও পড়ুন :
জনৈক বুযুর্গ বলেন, আমাকে এক বরফ বিক্রেতা একটি উপদেশ দিয়েছেন। লােকেরা জিজ্ঞাসা করল, কি সেই উপদেশ? তিনি বলেন, একদা বাজারে গেলাম। সেখানে দেখলাম যে, এক বরফ বিক্রেতা বরফ নিয়ে বসে আছে, কিন্তু কোন ক্রেতা নেই। আর তার বরফ ক্রমেই গলে যাচ্ছে। তাই সে ব্যক্তি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ল যে, যদি আমি কোন ক্রেতাই না পাই, তাহলে তাে পুরাে বরফ গলে যাবে আর আমার টাকাগুলাে নষ্ট হয়ে যাবে। পরিশেষে সে ব্যক্তি বাজারে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে বলতে লাগল, হে লােক সকল! তােমরা সেই ব্যক্তির প্রতি দয়া কর, যার পুজি গলে যাচ্ছে। সুতরাং আমাদের এ জীবনও বরফের ন্যায়, যা ক্রমেই গলে যাচ্ছে। কবি বলেন: বরফের ন্যায় জীবনের সীমা ক্রমেই পাচ্ছে হ্রাস নিরবে!!
আমাদের জীবনাকাশে আজ যে সূর্যটি অস্তমিত হল তার উদয় আর কখনাে ঘটবে না। আজকের দিনটা অতিবাহিত হয়ে গেছে, আগামীর দিনগুলােও চলে যাবে। এভাবেই একদিন জীবনের যবনিকাপাত ঘটবে; জীবন শেষ হয়ে যাবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন