Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

একটি আয়াত আমার জীবন বদলে দিয়েছে - ইসলামিক গল্প

ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্পের বই pdf | ইসলামিক গল্প থেকে শিক্ষা | মেয়েদের ইসলামিক গল্প | স্বামী স্ত্রীর রােমান্টিক ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্প ও কাহিনী | ছােটদের ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্প ও কাহিনী pdf | ইসলামিক গল্পের লিংক | শিশুদের ইসলামিক গল্পের বই pdf | ইসলামিক গল্পের বই | ছােটদের ইসলামিক গল্পের বই pdf | Bongotweet.com

ফুদায়েল (রহ.) এর পরিচয়

বিখ্যাত বুজুর্গ ফুদায়েল ইবনে আয়াদ। তার পুরো নাম ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ ইবনে বিশর ইবনে মাসউদ আবু আলি, আত তামিমি আল-ইয়ার্বুই আল-খুরাসানী। এছাড়া আবু আলী এবং আল-তালাকান নামেও সে পরিচিত ছিল। তার বাড়ী উজবেকিস্তানের সমরকন্দ শহরে। ফুদায়েল ইবনে আয়াদ ছিলেন এমন এক ব্যাক্তি যিনি কুখ্যাত ডাকাত থেকে একজন বিখ্যাত তাকওয়াবান, পরহেজগার ও ইসলামিক পন্ডিতে রুপান্তরিত হন।

ফুদায়েল (রহ.) এর প্রাথমিক জীবন

তিনি তাঁর জীবনের প্রথম দিকে সিরিয়া এবং খোরাসানের এক কুখ্যাত ডাকাত দলের নেতা ছিলেন। ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ আবু ওয়ার্দ থেকে সরখাস শহরের রাস্তায় রাতেরবেলা ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকত। তারপর রাস্তা দিয়ে আসা বিভিন্ন কাফেলায় আক্রমন করত এবং যাত্রীদের ছিনতাই করত।

ফুদায়েল (রহ.) এর দ্বীনে ফেরার গল্প

আবু ওয়ার্দ এবং সরখাস শহরের মধ্যর্তী রাস্তায় একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল। সেই গ্রামে একটি মেয়ে থাকত যাকে ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ খুব বেশি ভালোবাসতো। এক রাতে, তার সাথে দেখা করতে ফুদায়েল মরিয়া হয়ে উঠে। আল-ফুদায়েল তার বাড়িতে গেল এবং দেয়াল বেয়ে বাড়ির উপরে উঠতে লাগল। সে দেয়াল বেয়ে যখন উপরে উঠছিল,তখন একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। সেই কণ্ঠস্বরে ভেসে আসছিল পবিত্র আল কুরআনের সুমধুর তিলাওয়াত। কেউ একজন মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআনের এই আয়াতটি তিলাওয়াত করছিল,আল্লাহ তায়া’লা বলেন: যারা ঈমান এনেছে তাদের হৃদয় কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য নাযিল হয়েছে তার জন্য বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? আর তারা যেন তাদের মত না হয় যাদেরকে আগে কিতাব দেয়া হয়েছিল-অতঃপর বহু কাল অতিক্রান্ত হওয়ার তাদের অন্তরসমূহ কঠিন হয়ে পড়েছিল। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক। (আল কুরআন- ৫৭ : ১৬) 

আরও পড়ুন : 

কুরআনের এই আয়াত শুনে ফুদায়েলের অন্তর বিগলিত হয়ে গেল। ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে লাগল। আল-ফুদায়েল বলতে লাগল, "হে আমার রব, সত্যই সময় এসেছে।" এর পর ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ যেখান থেকে এসেছিল আবার সেখানে ফিরে গেল। যাওয়ার সময় সে রাস্তার মধ্যে একটি কাফেলা দেখতে পেল। আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ তখন তাদের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করল। ফুদায়েলকে কাফেলার লোকেরা চিন্তে পারিনি। সে দেখল তারা একটি গুরুতর আলোচনা করছে। কাফেলার একজন লোক অন্যদের উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল, আসুন আমরা সবাই আমাদের যাত্রা চালিয়ে যায়। তখন অন্য একজন জবাব দিল, না! সকাল না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাত্রা শুরু করব না। কারণ আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ রাস্তায় আমাদের ছিনতাই করার অপেক্ষায় কোথাও লুকিয়ে আছে। এখন যাত্রা শুরু করলে আমরা আমাদের সবকিছু হারাব। আমরা সকালে যাত্রা শুরু করব। 

আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ তাদের সব কথা শুনল। সে নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে লাগল, কতইনা খারাপ কাজ করছে সে। ফুদায়েল মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগল এবং বলতে লাগল: হায়! রাতের আঁধারে চারিদিকে আমি পাপাচার করে বেড়াই। সবাই আমার ভয়ে ভীত। এমনকি একদল মুসলমান আমার ভয়ে ভীত হয়ে এখানে রাত্রিযাপন করছে। প্রকৃতপক্ষে আমি অনুভব করি যে আল্লাহ আমাকে এখানে এনেছেন যাতে আমি আমার চরিত্রের সংশোধন করতে পারি। হে আল্লাহ, সত্যিই আমি আপনার কাছে তওবা করছি। আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিন। এরপর আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ কাফেলার লোকদের কাছে নিজের পরিচয় দিল। নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে তাদের কাছে ক্ষমা চাইলো এবং তাদেরকে ভয় না পেতে বলল। তারপর আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ যাদের কাছ থেকে চিন্তায় করেছিল তাদের জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিতে থাকে এবং সে উত্তম রুপে তওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে এলো। পরবর্তীতে আল-ফুদায়েল ইবনে আইয়াদ একজন পরহেজগার, তাক্বওয়াবান ও বিখ্যাত ইসলামিক পন্ডিত হয়েছিল।

নীতিকথা

এই ইসলামিক শিক্ষামূলক গল্প থেকে আমরা যা শিখতে পারি তা হচ্ছে, কোন ব্যক্তি যতই পাপী হোক না কেন, তাদের সর্বদা এমন একটি সুযোগ আসে যে তারা তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে পারে। আমরা কোন ব্যক্তিরই ভবিষ্যত সম্পর্কে জানি না। তাই আমাদের উচিৎ সবার জন্য হিদায়েত এর দোয়া করা। অনেক সময় মানুষের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানুষটি ও আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা হয়ে উঠে। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক সাহাবীর ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল

নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখুন :