Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

শারীরিক শিক্ষা | নবম-দশম শ্রেণী | অধ্যায়-০৭ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর-০১

শারীরিক শিক্ষা | নবম-দশম শ্রেণী | অধ্যায়-০৭ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর-০১

∎ প্রশ্ন ০১: আরিফ সাহেবের মেয়ে টুসুর জন্মের কয়েক বছর পর দেখলেন যে, স্বাভাবিক শিশুদের চেয়ে তার আচরণ ভিন্ন এবং বয়সের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। তাকে ডাকলে সাড়া দেয় না, একই কথা বার বার বলে সে নিজে যা বুঝে তাই করে। সে সকলের সাথে মিলেমিশে চলতে পারে না

ক. ইকোলালিয়া কী?
খ. অটিজম কেন হয়? ব্যাখ্যা কর
গ.টুসু কী ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. টুসুর আচরণ সমাজে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

➲ ১নং প্রশ্নের উত্তর 

ক. কোনো কোনো অটিস্টিক শিশু কোন একটি নির্দিষ্ট শব্দ বলে এবং টিয়া পাখির মতো শব্দটি বার বার এক নাগাড়ে বলতে থাকে, অটিস্টিক শিশুর এরূপ আচরণই হলো ইকোলালিয়া।

খ. অটিজম স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যার একটি বিস্তৃত রূপ। অটিজম কেন হয় এখন পর্যন্ত তার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির সাথে সাথে কারণ অনুসন্ধানের কাজটিও বেড়ে চলেছে।
বিভিন্ন কারণে যে অটিজম হয়ে থাকে বিষয়টি বর্তমানে ' বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রতিষ্ঠিত। বিভিন্ন পর্যায়ে অটিজমের যে জটিল লক্ষণ দেখা যায় তা থেকে বেশ বলা যায় যে, একাধিক কারণে অটিজম হতে পারে। জন্মপূর্ব, জন্মকালীন জন্ম পরবর্তী যে কোনো সময়ে জেনেটিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের প্রভাবে অটিজম হতে পারে।


গ. উদ্দীপকের আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, টুসু অটিজম সমস্যায় আক্রান্ত নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-

অটিজম কোনো রোগ নয়। এটি স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যার একটি বিস্তৃত রূপ যা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত। প্রাক শৈশবকাল থেকে সমস্যাটি শুরু হয়, যা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। সাধারণত শিশুর জন্মের দেড় বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সামাজিক সম্পর্ক, যোগাযোগ এবং আচরণের ভিন্নতাই সমস্যাটির প্রধান বিষয়। এছাড়াও অটিজম রয়েছে এমন শিশুর শারীরিক বুদ্ধিভিত্তিক, শিক্ষণ প্রক্রিয়া ইন্দ্রিয়ানুভূতি সংক্রান্ত সমস্যা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অটিজমের বৈশিষ্ট্য মাত্রা প্রতিটি শিশুর ক্ষেত্রে আলাদা। মূল শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো সামাজিক মেলামেশা, যোগাযোগ পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ

অটিজমের কারণে ইন্দ্রিয়ানুভূতি, অপরের সাথে যোগাযোগ করার কৌশল এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া প্রক্রিয়াগুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে তাদের মধ্যে একই ধরনের আচরণ অথবা অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের উৎসাহ দেখা যায়। যা উদ্দীপকের টুসু ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়।


ঘ. টুসু একজন অটিস্টিক শিশু। টুসুর আচরণ সমাজে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে তা পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো-

টুসুর আচরণ অন্যের সাথে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। যেমনঅন্যের চোখে চোখ রেখে তাকায় না, অন্যের প্রতি নির্লিপ্ত থাকে এবং একা থাকতে পছন্দ করে। অন্যের মনোযোগ পেতে চায় না এবং জড়িয়ে ধরা পছন্দ করে না। অন্যের রাগ বা আদরের প্রতি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখায় না, উত্তেজিত আক্রমণাত্মক হয়ে উঠার প্রবণতা তার সামাজিক সম্পর্ক তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এসব নেতিবাচক আচরণের পাশাপাশি কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে যা স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় তাদেরকে সমাজে আলাদাভাবে পরিচিতি দান করে। যেমনদীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি, কম্পিউটার প্রযুক্তিগত দক্ষতা, শৈল্পিক দক্ষতা, বানান মনে রাখা, সততা ইত্যাদি। পরিশেষে বলা যায় যে, টুসুর আচরণ সমাজে ইতিবাচক নেতিবাচক উভয় ধরনের প্রভাবই ফেলতে পারে।