অটিজম
কোনো রোগ নয়। এটি
স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যার একটি বিস্তৃত রূপ
যা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত। প্রাক
শৈশবকাল থেকে এ সমস্যাটি
শুরু হয়, যা শিশুর
স্বাভাবিক বিকাশ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। সাধারণত শিশুর
জন্মের দেড় বছর থেকে
তিন বছরের মধ্যে অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সামাজিক সম্পর্ক, যোগাযোগ এবং আচরণের ভিন্নতাই
এ সমস্যাটির প্রধান বিষয়। এছাড়াও অটিজম রয়েছে এমন শিশুর শারীরিক
ও বুদ্ধিভিত্তিক, শিক্ষণ প্রক্রিয়া ও ইন্দ্রিয়ানুভূতি সংক্রান্ত
সমস্যা ও বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
অটিজমের বৈশিষ্ট্য ও মাত্রা প্রতিটি
শিশুর ক্ষেত্রে আলাদা। মূল শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য
হলো সামাজিক মেলামেশা, যোগাযোগ ও পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ
।
অটিজমের
কারণে ইন্দ্রিয়ানুভূতি, অপরের সাথে যোগাযোগ করার
কৌশল এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া
প্রক্রিয়াগুলো বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে তাদের
মধ্যে একই ধরনের আচরণ
অথবা অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের উৎসাহ দেখা যায়। যা
উদ্দীপকের টুসুর ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত
হয়।
টুসুর
আচরণ অন্যের সাথে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায়
গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। যেমন— অন্যের
চোখে চোখ রেখে তাকায়
না, অন্যের প্রতি নির্লিপ্ত থাকে এবং একা
থাকতে পছন্দ করে। অন্যের মনোযোগ
পেতে চায় না এবং
জড়িয়ে ধরা পছন্দ করে
না। অন্যের রাগ বা আদরের
প্রতি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখায় না, উত্তেজিত ও
আক্রমণাত্মক হয়ে উঠার প্রবণতা
তার সামাজিক সম্পর্ক তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এসব নেতিবাচক আচরণের পাশাপাশি কিছু ইতিবাচক দিক
রয়েছে যা স্বাভাবিক শিশুদের
তুলনায় তাদেরকে সমাজে আলাদাভাবে পরিচিতি দান করে। যেমন— দীর্ঘমেয়াদী
স্মৃতি, কম্পিউটার ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা,
শৈল্পিক দক্ষতা, বানান মনে রাখা, সততা
ইত্যাদি। পরিশেষে বলা যায় যে,
টুসুর আচরণ সমাজে ইতিবাচক
ও নেতিবাচক উভয় ধরনের প্রভাবই
ফেলতে পারে।