Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির ভাবসম্প্রসারণ

শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করি শির | শৈবাল দীঘিরে বলে | শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করে শির | ভাবসম্প্রসারণ

শৈবাল দীঘির বলে উচ্চ করি শির 
লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির

মূলভাব : জগতে এমন কিছু লোক আছে যারা উপকারীর উপকার স্বীকার করে না, বরং তারা সামান্য উপকার করতে পারলেই উপকৃত ব্যক্তির কাছে তার উপকারের কথাটি সদম্ভে প্রচার করে বেড়ায়।

সম্প্রসারিত ভাব : এ জগতে সকলের সামর্থ্য সমান নয়। শক্তি ও কর্মদক্ষতায় মানুষে মানুষে বিরাট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কেউ কেউ বিরাট শক্তির অধীশ্বর; ব্যাপক অবদানের মাধ্যমে এ পৃথিবীবাসীর অশেষ কল্যাণ সাধন করেন। কেউ কেউ আবার সীমিত শক্তি নিয়েও জন্মগ্রহণ করেন। যাঁরা মহৎ তাঁরা নিরহঙ্কার। তাঁরা জীব ও জগতের কল্যাণ সাধনে ব্রতী হন। দীঘির জলেই শৈবালের জন্ম। কিন্তু এ নিয়ে দীঘি কোনো অহংকার বোধ করে না। অথচ দীঘির অগাধ জলে এক ফোঁটা শিশির বিন্দু ঢেলে শৈবাল দীঘিকে বলে, সে যেন তার দানের কথা স্মরণ রাখে—ভুলে না যায়। যার জলে শৈবালের জন্ম তার সামান্য উপকারে শৈবালের এমন দম্ভ। যে ব্যক্তি পরের উপকার করে শৈবালের মতোই তা সদম্ভে প্রচার করতে গর্ববোধ করে, উপকৃতকে প্রতি স্মরণ করিয়ে দিতে সংকোচ করে না, বুঝতে হবে তার হৃদয়ে মহত্ত্বের স্পর্শ নেই। তারা প্রশংসার কাঙাল, নিজেদের ক্ষুদ্রতা ঢেকে রাখতে তারা নির্লজ্জের মতো নিজেদের ঢাক নিজেরাই বাজিয়ে বেড়ান। কিন্তু যাঁরা প্রকৃত উদার, মহৎ ও পরের কল্যাণে ব্রতী; তাঁরা জলে ভরা দীঘির মতোই পরিপূর্ণতার আকর, যা তৃষিতের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য অবারিত। তাঁরা তৃষিতের তৃষ্ণা মেটান, আপনাকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েও শৈবালের মতো সেই দানের হিসেব লিখে রাখতে বলেন না। এখানেই ক্ষুদ্র ও মহৎ প্রাণের পার্থক্য।

মন্তব্য : মহৎ ও উদার প্রাণের মানুষেরা পরোপকারে কখনো গর্ববোধ করেন না। পরোপকারের মাঝেই তাঁরা আত্মতৃপ্তি লাভ করেন।