Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

রােযা ভঙ্গের কারণ এবং কাযা ও কাফফারা

রোজা ভঙ্গের কারণ | রোজা ভঙ্গের কারণ স্বপ্নদোষ | রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি | নারীর রোজা ভঙ্গের কারণ | স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ | রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ | রোজা ভঙ্গের কারণ কি কি | রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি | মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ | নফল রোজা ভঙ্গের কারণ | রোজা ভঙ্গের কারণ দলিল সহ | রোজা ভঙ্গের কারণ আল কাউসার | রোজা ভঙ্গের কারণ রক্ত | মহিলাদের রোজা ভঙ্গের কারণ | রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো কি কি | রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি | রোজা ভঙ্গের কারণ গুলো | রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ pdf | রোজা ভঙ্গের কারণ কি

বিভিন্ন কারণে রােযা ভঙ্গ হয়ে যায়। যে সব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় রােযা অবস্থায় সেসব কাজগুলাে অবশ্যই পরিত্যাজ্য, অন্যথায় রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রােযা ভঙ্গের পর কোন কোন অবস্থায় শুধু কাযা ওয়াজিব হয়। আবার কোন কোন অবস্থায় কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হয়।


যে সব কারণে রােযা ভঙ্গ হয় এবং শুধুমাত্র কাযা ওয়াজিব হয়

রােযাদার ব্যক্তিকে জোরপূর্বক কোন কিছু আহার করানো হলে, কুলি করা বা নাকে পানি দেওয়ার সময় রোযার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও অসতর্কতাবশত পেটে পানি প্রবেশ করলে, রোযাদারের প্রতি কোন কিছু নিক্ষেপ করার পর তা তার গলায় প্রবেশ করলে, ডুব দিয়ে গােসল করার সময় হঠাৎ নাক বা মুখ দিয়ে পানি গলার মধ্যে প্রবেশ করলে, রােযার দিনে ঘুমের অবস্থায় কোন কিছু আহার করলে, অথবা রােযার অবস্থায় পাথর, লােহা বা সীসার টুকরা বা এ জাতীয় কোন বস্তু গলাধঃকরণ করলে যা সাধারণত খাদ্য হিসাবে খাওয়া হয় না বা ঔষধরূপেও সেবন করা হয় না এ সব ক্ষেত্রে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ রােযার কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না (আলমগী , ১ম খণ্ড)।

লােবান, আগর বাতি জ্বালিয়ে ইচ্ছাকৃত এর ধোয়া গ্রহণ করলে, হুক্কা, সিগারেট ইত্যাদি পান করলে, কাঁচা লাই যা রান্না করা হয়নি তা ভক্ষণ করলে, তাজা বা শুকনা আখরোট, শুকনাে বাদাম, খােসাসহ ডিম, ছিল্কাসহ আনার ও কাঁচা পেস্তা ভক্ষণ করলে রােযা ভঙ্গ হবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। শুকনাে পেস্তাবাদাম চিবিয়ে ভক্ষণ করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। অবশ্য না চিবিয়ে গিলে ফেললে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। খােসা ফাটা থাকলেও অধিকাংশ ফকীহর মতে এ হুকুমই প্রযােজ্য হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

চাউল, বাজরা, মশুর, মাষকলাই ইত্যাদি ভক্ষণ করলে রােযা ভঙ্গ হবে ও কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। দাঁতের ফাঁকে যদি কোন খাদ্যদ্রব্য আটকিয়ে থাকে আর তা সামান্য পরিমাণ হলে রোযা ফাসিদ হবে না। পরিমাণে বেশি হলে রােযা ফাসিদ হয়ে যাবে। চনা বুট বা এর চেয়ে বড় কোন কিছু হলে একে বেশি বলে গণ্য করা হবে। এর চেয়ে ছােট বা কম হলে তা কম বলে ধর্তব্য হবে । এরূপ কোন বস্তু মুখ থেকে বের করে হাতে নিয়ে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করলে রােযা ফাসিদ হয়ে যাবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

দাঁতের ফাকে আটকে থাকা তিল গিলে ফেললে রােযা ভঙ্গ হবে না। কেননা এতাে একেবারেই ক্ষুদ্র বস্তু। তবে এ জাতীয় বস্তু মুখের বাইরে থেকে নিয়ে গিলে ফেললে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে কাফফারা ওয়াজিব হবে কিনা এ সম্বন্ধে ফকীহগণের মতভেদ থাকলেও সহীহ মত হলাে, না চিবিয়ে গলাধঃকরণ করলে রােযা ভঙ্গ হবে এবং কাফরা ওয়াজিব হবে। আর চিবিয়ে গলাধঃকরণ করলে রােযা ভঙ্গ হবে না। অবশ্য চিবানের পর গলার স্বাদ অনুভূত হলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদি গমের দানা চিবায় তবে রােযা ফাসিদ হবে না। কেননা এতো মুখেই বিলীন হয়ে যায়। অন্যকে খাওয়ানাের জন্য কেউ যদি খানা চিবায় এবং তা যদি মুখের ভেতর চলে যায় তাহলে রােযা ভঙ্গ হবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

সাহরীর লােকমা মুখে রয়ে গেলে এবং ফজর উদিত হওয়ার পর তা গলাধঃকরণ করলে তার রােযা ভঙ্গ হবে ও কাযা ওয়াজিব হবে। আর যদি মুখ থেকে বের করে পুনরায় খায় তাহলে কাযা কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। অন্যের থু থু গলাধঃকরণ করলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু প্রিয় ব্যক্তির থু থু গলাধঃকরণ করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। নিজের মুখের থুথু বেশিই হােক তা গলাধঃকরণ করলে রােযার কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু নিজের থুথু হাতে নিয়ে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করলে রােযা ভঙ্গ হবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। যদি কথা বলার সময় অথবা অন্য কোন সময় মুখের থুথুতে রােযাদার ব্যক্তির ওষ্ঠদ্বয় ভিজে যায় অতঃপর সে যদি তা গিলে ফেলে তাহলে তার রোযা ফাসিদ হবে না। যদি লালা মুখ থেকে থুতনি পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে যায় এবং এর যােগসূত্র মুখের মধ্যে থাকে এমতাবস্থায় উক্ত লালা মুখে টেনে নিয়ে তা গিলে ফেললে রােযা ফাসিদ হবে না। কিন্তু মুখের সাথে যােগসূত্র ছিন্ন হয়ে গেলে এবং তা গলাধঃকরণ করলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

রােগের কারণে যদি কারাে মুখ থেকে লালা নির্গত হয়ে মুখে পুনঃ প্রবেশ করে এবং হলকুমে ঢুকে তবে রােযা ভঙ্গ হবে না। রক্ত পান করলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। দাত থেকে রক্ত বের হয়ে হলকুমে ঢুকলে যদি থুথুর পরিমাণ বেশি হয় তাহলে ক্ষতি নেই। আর রক্তের পরিমাণ বেশি হলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। সমান সমান হলেও রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রেশমের রঙ্গে কাজ করার সময় যদি রেশম মুখের ভেতর ঢুকে এবং মুখের থুথু রঙ্গিন হয়ে যায় তবে এ থুথু গলাধঃকরণ করলে এবং এ সময় রােযার কথা স্মরণ থাকলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে বৃষ্টি বা বরফের পানি গলার ভেতর ঢুকলেও রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

রােযা অবস্থায় চোখের দুই-এক ফোটা পানি মুখে ঢুকলে রােযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু চোখের পানির পরিমাণ বেশি হলে এবং সম্পূর্ণ মুখে এর লবণাক্ততার স্বাদ অনুভূত হলে আর সে পানি গিলে ফেললে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বমি হওয়ার পর তা পুনরায় গিলে ফেললে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। নাকে নস্য গ্রহণ করলে, কানে তৈল ঢাললে অথবা পায়খানার রাস্তায় ডুস নিলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

কোন মহিলা যদি তার যােনি পথে কোন তরল পদার্থ ফোটা ফোটা করে প্রবেশ করায় তবে তার রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। পেট বা মাথার যখমে ঔষধ ব্যবহার করার পর তা যদি পেটে বা মাথার ভেতরে ঢুকে যায় তাতে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। ভেতরে না ঢুকলে রােযা ভঙ্গ হবে না। অবশ্য তরল ঔষধ ব্যবহার করার পর তা ভেতরে ঢুকছে কি ঢুকেনি নিশ্চিতভাবে না জানা গেলে ইমাম আবু হানীফা (র)-এর মতে এ অবস্থায়ও রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কেননা তরল ঔষধ স্বভাবতই ভেতরে ঢুকে যায় ।

যদি কারাে পেটে তীর বা বর্শা ইত্যাদি বিদ্ধ হয়ে পেটের ভেতরে থেকে যায় তাহলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তবে তীর বা বর্শার কিছু অংশ বাইরে থেকে গেলে রােযা ভঙ্গ হবে না। সুতা দিয়ে বাঁধা গােশতের টুকরা গিলে তৎক্ষণাৎ তা বের করে ফেললে রােযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু সাথে সাথে বের না করে রেখে দিলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। পানি বা তৈল দ্বারা ভিজানাে আঙ্গুল মলদ্বারে অথবা মহিলার যোনিদ্বারে ঢুকানাে হলে, পানি বা তেল ভিতরে প্রবেশ করার কারণে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রােযার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় এরূপ করা হলে সেক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযােজ্য হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

মলত্যাগের সময় রােযাদার ব্যক্তির বসা অবস্থায় মলদ্বার বেরিয়ে আসলে পানি ব্যবহারের পর ঐ পানি না মুছে দাড়ালে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ তাতে গুহ্যদ্বার দিয়ে পেটের ভিতর পানি প্রবেশের আশংকা থাকে।

ফকীহগণ একথাও বলেছেন যে, রােযাদার ব্যক্তি ইসতিনজা করার সময় স্বাস গ্রহণ করবে না। কেননা এতে পেটের ভিতর পানি ঢােকার আশংকা আছে। রােযাদার ব্যক্তি যদি ইসতিনজার সময় এত বেশি পানি ব্যবহার করে যে, যাতে পানি মলদ্বারের ভেতরে ঢুকে যায় তবে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রােযা অবস্থায় কাউকে জোরপূর্বক সঙ্গম করানাে হলে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। অনুরূপ কোন মহিলা যদি কোন পুরুষকে জোরপূর্বক সঙ্গম করতে বাধ্য করে তাহলে উক্ত পুরুষের উপরও কাযা ওয়াজিব হবে কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। স্ত্রীকে চুম্বন করার পর বীর্য নির্গত হলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। স্ত্রী স্বামীকে চুম্বন করলে যদি আর্দ্রতা দেখতে পায় তবে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অনুরুপ আর্দ্রতা না দেখে শুধু তৃপ্তি অনুভূত হলেও ইমাম আবূ ইউসুফ (র)-এর মতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অবশ্য ইমাম মুহাম্মদ (র) ভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)। 

নিজ স্ত্রীকে স্পর্শ করা, একত্রে মিলিতভাবে শয়ন করা, মুসাফাহা করা এবং মুআনাকা করা—এগুলাে সব চুমু দেওয়ার মতই অর্থাৎ স্ত্রীকে চুমু দিলে যে হুকুম হয় এ সকল ক্ষেত্রেও ঐ হুকুম প্রযােজ্য হবে। কাপড়ের উপর দিয়ে স্ত্রীকে স্পর্শ করার পর বীর্য নির্গত হলে এ ক্ষেত্রে স্বামী যদি স্ত্রীর শরীরের উষ্ণতা অনুভব করে তাহলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অন্যথায় ভঙ্গ হবে না। রােযা অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি হস্তমৈথুন করে এবং এতে বীর্য নির্গত হয় তবে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। অনুরূপ স্ত্রীর দ্বারা হস্তমৈথুন করিয়ে বীর্যপাত করানাে হলে তাতেও রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে (আলমগীর, ১ম খণ্ড)। 

সাহরী খাওয়ার পর পান মুখে ঘুমিয়ে পড়লে এবং সুবহে সাদিকের পর জাগ্রত হলে এ রােযা সহীহ্ হবে না। কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না (তাতার খানিয়া, ১ম খণ্ড)।

ঘুমন্ত মহিলার সাথে সহবাস করলে মহিলার রােযা ফাসিদ হয়ে যাবে। তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে এবং পুরুষের উপর কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। ক্ষণে ভাল ক্ষণে পাগল এ জাতীয় কোন মহিলা যদি সুস্থ অবস্থায় রােযার নিয়ত করে এবং পরে যদি তার সাথে কেউ যিনা করে তবে তার উপরও কাযা ওয়াজিব হবে এবং পুরুষের উপর কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

যদি কোন ব্যক্তি রােযা অবস্থায় ভুলে পানাহার বা স্ত্রী সহবাস করার পর রােযা ভেঙে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পুনরায় পানাহার করে তবে তার রােযা অবশ্যই ভঙ্গ হয়ে যাবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

বমি হওয়ার পর রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে রােযা অবশ্যই ভঙ্গ হয়ে যাবে। তাতে কাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর এতে রােযা ভঙ্গ হয় না এ কথা জানা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃত রােযা ছেড়ে পানাহার করলে তাতে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। স্বপ্নদোষ হওয়ার পর রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। অবশ্য স্বপ্নদোষের হুকুম জানা সত্ত্বেও এরূপ করলে কাফফারাও ওয়াজিব হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

রমযান মাসে কোন কারণবশত যদি রােযা ভঙ্গ হয়ে যায় তাহলেও দিনের বেলায় রােযাদারের ন্যায় পানাহার বন্ধ রাখা ওয়াজিব (হিদায়া, ১ম খণ্ড)।



যেসব কারণে রােযা ভঙ্গ হয় এবং কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়

রমযান মাসে নিয়ত করে রােযা রাখার পর ওজর ব্যতীত স্বেচ্ছায় তা ভঙ্গ করলে ঐ রােযার কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়। মলদ্বার বা যােনিদ্বার দিয়ে যৌনচারিতায় লিপ্ত হলে রােযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। বীর্যপাত হােক বা না হােক কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। মহিলা যদি স্বেচ্ছায় পুরুষের সাথে এ কাজে লিপ্ত হয় তবে তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এ হুকুম প্রযােজ্য হবে। জোরপূর্বক অরম্ভ করার পরে মহিলা যদি স্বেচ্ছায় এ কাজে রাযী হয়ে যায় তবে সে ক্ষেত্রেও কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। কোন মহিলা যদি কোন বালক বা পাগলকে সুযােগ দেয় এবং তারা যদি তার সাথে যিনা করে তবে উক্ত মহিলার উপর কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য বা ঔষধ গ্রহণ করলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। রােযাদার ব্যক্তি যদি খাদ্য বা পানীয় জাতীয় কোন কিছু পানাহার করে তাহলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে।

যে সব গাছের পাতা সাধারণত ভক্ষণ করা হয় তা ভক্ষণ করলে কাযা ও কাফফার উভয় ওয়াজিব হবে। শাক-সবজির হুকুমও অনুরূপ। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।

শুধু লবণ খেলেও কাফফারা ওয়াজিব হবে। রােযা অবস্থায় শিংগা লাগানাের পর রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে আহার করলে কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। চোখে সুরমা ব্যবহার করা অথবা শরীরে বা গোঁফে তৈল মাখার পর রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। মিসওয়াক করার পর রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

পরনিন্দা করার কারণে রােযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।
কোন ঘুমন্ত মহিলার সাথে সহবাস করা হলে পুরুষের উপর কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে (শামী)।

রমযান মাসে রােযার নিয়ত করে রােযা আরম্ভ করে ভঙ্গ করলে কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে। রমযান ছাড়া অন্য কোন রােযা ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

অনুরূপ রমযানের রােযার নিয়ত করার পূর্বে রােযা ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না (হিদায়া, ১ম খণ্ড)।

তথ্যসূত্র : রোযার মাসআলা-মাসায়েল, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন।

নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখুন :