Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

সৃজনশীল প্রশ্ন | একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি | ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি - দ্বিতীয় পত্র | প্রথম অধ্যায়

সৃজনশীল প্রশ্ন | একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি | ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি - দ্বিতীয় পত্র | প্রথম অধ্যায়

প্রশ্ন ০১: একে একে বিজয় নিশানা উড়িয়ে যাচ্ছিলেন সেনাপতি জামাল-বিন-রইছ । উড়িরচর অধিকার করে তিনি রামনগরের দিকে অগ্রসর হন। সেখানে তিনি রাজা বিশ্বজিৎ-এর পুত্র সুমন পালকে পরাজিত করে তা অধিকার করেন এবং বিশ্বজিৎ-এর দু কন্যাকে এবং তার স্ত্রীকে বন্দী করেন। এরপর আরও কয়েকটি অঞ্চল অধিকার করেন জামাল-বিন-রইছ। তবে অসত্য এক অভিযােগের কারণে জামাল-বিন-রইছকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। 

(ক) খলিফা প্রথম ওয়ালিদ কত খ্রিস্টাব্দে দামেস্কের সিংহাসনে আরােহণ করেন?

(খ) “আরবরা অর্থনৈতিক কারণে ভারতবর্ষে অভিযান প্রেরণ করেছিল"- ব্যাখ্যা কর। 

(গ) উদ্দীপকের জামাল-বিন-রইছের সাথে মুহাম্মদ বিন কাসিমের ব্রাহ্মণাবাদ, অরাের ও মুলতানের পতনের সম্পর্ক নির্ণয় কর। 

(ঘ) জামাল-বিন-ইছের মৃত্যুতে মুহাম্মদ বিন কাসিমের মৃত্যুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়'- বিশ্লেষণ কর। 

 ⇛১নং প্রশ্নের উত্তর⇚

(ক) ৭০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ওয়ালিদ দামেস্কের সিংহাসনে আরােহণ করেন। 

(খ) প্রাচীনকাল হতে আরবের সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। ভারতের অফুরন্ত ধনসম্পদ, ঐশ্বর্য ও বৈভবের সাথে আরব বণিকগণ ভালােভাবেই পরিচিত ছিল। নতুন নতুন অঞ্চল জয়ের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার ও গণিমত লাভ করা আরবদের নেশায় পরিণত হয়। খলিফাগণ আরব যােদ্ধাদের আর্থিক সচ্ছলতার বিষয় চিন্তা করে নতুন নতুন রাজ্যজয়ের অনুমতি দিতেন। এ কারণে আরবগণ ভারতে সামরিক অভিযান প্রেরণ করেন। 

(গ) উদ্দীপকের জামাল-বিন-রইছ একজন সেনাপতি। তিনি উড়িরচর অধিকার করেন এবং রাজা বিশ্বজিৎকে পরাজিত করে রামনগর দখল করেন। উদ্দীপকের ঘটনার সাথে সেনাপতি মুহাম্মদ বিন কাসিমের ব্রাহ্মণাবাদ, আরাের ও মুলতান জয়ের মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ গভীর সম্পর্ক রয়েছে। রাওয়ারের যুদ্ধে রাজা দাহিরকে পরাজিত করে মুহাম্মদ বিন কাসিম ব্রাহ্মণবাদের দিকে অগ্রসর হয়। এর শাসক ছিলেন জয়সিংহ। জয় সিংহ মুহাম্মদ বিন কাসিমের কাছে পরাজিত হন। এখানে রাজা দাহিরের অপর স্ত্রী লােদী এবং দুই কন্যা সূর্যদেবী ও পরিমল দেবী বন্দী হন। আরাের ছিল সিন্ধুর রাজধানী। রাজা দাহিরের পুত্র কুফির সাথে মুহাম্মদ বিন কাসিমের যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুহাম্মদ বিন কাসিম চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হন। আরাের বিজয় সম্পন্ন করে আরব বাহিনী মুলতানের দিকে অগ্রসর হয়। মুলতানে হিন্দুরা প্রায় দুই মাস যাবৎ প্রতিরােধ করে পরাজিত হয়। ৭১৩ খ্রিষ্টাব্দে মুলতান আরবদের দখলে চলে আসে। এভাবে তিনি রাজা দাহিরকে পরাজিত করে ব্রাহ্মণাবাদ, আরাের এবং মুলতান দখল করেন। 

(ঘ) উদ্দীপকের জামাল-বিন-রইছের মৃত্যুর সাথে মুহাম্মদ বিন কাসিমের মৃত্যুর সাদৃশ্য লক্ষ করা যায় । মুহাম্মদ বিন কাসিম ছিলেন হাজ্জাজ বিন ইউসুফের ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ তাকে সিন্ধু অভিযানে প্রেরণ করেন। মুহাম্মদ বিন কাসিম ছিলেন এ অভিযানের সেনাপতি। তিনি এ যুদ্ধে জয়লাভ করেন। তিনি রাজা দাহিরের স্ত্রী লােদী এবং দু কন্যা সূর্যদেবী ও পরিমল দেবীকে বন্দী করে দামেস্কে খলিফা সুলায়মানের দরবারে প্রেরণ করেন। যুদ্ধবন্দীদের সাথে খলিফা সাক্ষাৎ করতে এলে কন্যাদ্বয় মুহাম্মদ বিন কাসিমের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযােগ করে। এতে খলিফা অগ্নিশর্মা হয়ে মুহাম্মদ বিন কাসিমকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। তাঁর মৃতদেহ কন্যাদ্বয়ের সামনে আনলে তারা আবেগতাড়িত হয়ে সত্যতা স্বীকার করেন যে, তারা মা-বাবার হত্যার প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য মুহাম্মদ বিন কাসিমের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযােগ এনেছেন। এ সংবাদ শুনে খলিফা অত্যন্ত মর্মাহত হন এবং রাজা দাহিরের দু কন্যাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। উদ্দীপকের তেমনি ঘটনা ঘটে। সেনাপতি জামাল-বিন-রইছ উড়িরচর অধিকার করে রামনগরের দিকে অগ্রসর হন। সেখানে তিনি রাজা বিশ্বজিৎ-এর পুত্র সুমন পালকে পরাজিত করেন এবং বিশ্বজিৎ-এর স্ত্রী ও দু কন্যাকে বন্দী করেন। তারা জামাল-বিন-ইছের বিরুদ্ধে অসত্য এক অভিযােগ দায়ের করেন। এ অভিযােগের কারণে জামাল-বিন-রইছের মৃত্যুদণ্ড হয়। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের জামাল-বিন-রইছের সাথে মুহাম্মদ বিন কাসিমের সাদৃশ্য রয়েছে।

নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখুন :