প্রশ্নঃ অজু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কী কী?
উত্তরঃ অজু ভঙ্গের কারণ সাতটি, যথাঃ
১। প্রস্রাব বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বাহির হওয়া।
২। শরীর থেকে রক্ত, পুঁজ পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া।
৩। মুখ ভরে বমি করলে।
৪। থুথুর সাথে রক্তের পরিমাণ সমান বা বেশী হওয়া।
৫। চিত, কাত বা হেলান দিয়ে ঘুমালে।
৬। পাগল, মাতাল, অচেতন হয়ে গেলে।
৭। বালেগ নরনারী নামাযে উচ্চেঃস্বরে হাসলে।
অজু ভঙ্গের কারণ - ১:
প্রস্রাব বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বাহির হওয়া।
যেমন বায়ু, প্রস্রাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। [হেদায়া-১/৭]
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও) (সুরা মায়িদা-৬)
হযরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং-৫৬৮)
অজু ভঙ্গের কারণ - ২:
রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। [হেদায়া-১/১০]
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। [মুয়াত্তা মালিক-১১০]
আরও পড়ুন:
অজু ভঙ্গের কারণ - ৩:
মুখ ভরে বমি করা।
হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নিবে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১২২১]
অজু ভঙ্গের কারণ - ৪:
থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।
হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। [মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৩৩০]
অজু ভঙ্গের কারণ - ৫:
চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-২৩১৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-২০২)
অজু ভঙ্গের কারণ - ৬:
পাগল বা অচেতন হলে।
হযরত হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-৪৯৩]
অজু ভঙ্গের কারণ - ৭:
নামাজে উচ্চস্বরে হাসলে
হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। [সুনানে দারা কুতনি, হাদিস নং-৬১২])
ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি নিয়ে লেখা আপনার পোস্টটি খুবই ভালো হয়েছে।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন