ইমানের ৭৭ টি শাখা কি কি?

ইমানের ৭৭ টি শাখা কি কি - বঙ্গ টুইট - Bongo Tweet

কোন ব্যক্তির দুনিয়াবী সব দিক দিয়ে পূর্ণতা এসেছে, শুধু ঈমানের দিক দিয়ে পূর্ণতা আসেনি। তবে বলা হবে, তার আসল বিষয়েরই পূর্ণতা আসেনি। আমরা জীবনে অর্থনৈতিক ভাবে পূর্ণতায় পৌঁছতে চাই, যথাসাধ্য চেষ্টাও করি। শিক্ষার দিক দিয়ে পূর্ণতায় পৌঁছতে চাই, চেষ্টা করে অনেকে সফলতাও অর্জন করি। কিন্তু আসল বিষয় ঈমানের দিক দিয়ে পূর্ণতায় পৌঁছার চেষ্টা করি ক’জন? তার জন্য ইচ্ছাও বা আছে কতটুকু? যারাও বা ইচ্ছা করি, পূর্ণতায় পৌঁছার পথ সম্পর্কে তাদের বেশীর ভাগই অনবগত। অথচ অর্থনৈতিক পূর্ণতা, শিক্ষাগত পূর্ণতাসহ সকল ধরনের পূর্ণতার পূর্বে পূর্ণতা অর্জন করার দরকার ছিল আমাদের ঈমানের। তবেই আমাদের আসল তথা মূল বিষয়ে পূর্ণতা অর্জন হতাে। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন -

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ঈমানের সত্তরটির বা ষাটটির বেশী শাখা রয়েছে - তাঁর সর্বোত্তম শাখা হলাে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ বলা, আর সর্বনিম্ন শাখা হলাে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেয়া, লজ্জাও ঈমানের একটি শাখা। (মুসলিম শরীফ- ১/৪৭, তিরমিজী শরীফ-২/৮৯ উল্লেখিত হাদীসকে সামনে রেখে হাদীস গবেষকগণ ঈমানের শাখা ৭৭ টি উল্লেখ করেছেন। নিচে সেগুলাে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলাে।

১. কালিমা পড়া।
২. আল্লাহ তা'আলার উপর ঈমান আনয়ন করা।
৩. সবই আল্লাহ তা'আলার সৃষ্ট এর উপর ঈমান আনয়ন করা।
৪. ফেরেশতা সম্বন্ধে ঈমান আনয়ন করা।
৫. আল্লাহর কিতাব সম্বন্ধে ঈমান রাখা।
৬. পয়গম্বর সম্বন্ধে ঈমান রাখা।
৭. আখিরাত সম্বন্ধে ঈমান রাখা।
৮. তাকদীর সম্বন্ধে ঈমান রাখা।
৯. বেহেশস্তের উপর ঈমান রাখা।
১০. দোযখের উপর ঈমান রাখা।
১১. অন্তরে আল্লাহর মুহাব্বত রাখা।
১২. আল্লাহর ওয়াস্তে কারাে সাথে বন্ধুত্ব ও দুশমনি রাখা।
১৩. রাসুল (স.) এর প্রতি মুহাব্বত রাখা এবং তাঁর সুন্নাতকে ভালবাসা।
১৪. ইখলাসের সাথে আমল করা।
১৫. গুনাহ থেকে তওবা-ইস্তেগফার করা।
১৬. অন্তরে আল্লাহর ভয় রাখা বা তাকওয়া অর্জন করা।
১৭. আল্লাহ পাকের রহমতের আশা করা।
১৮. লজ্জাশীলতা বজায় রাখা।
১৯. শােকর-গুযার হওয়া।
২০. অঙ্গিকার রক্ষা করা।
২১. সবর বা ধৈর্য্য ধারণ করা।
২২. তাঁওয়াযু বা নম্রতা অবলম্বন করা।
২৩. দয়াদ্র ও স্নেহশীল হওয়া।
২৪. তাকদীরে সন্তুষ্ট থাকা।
২৫. তাকওয়াকুল অবলম্বন করা।
২৬. তাকাব্বুর বা অহংকার না করা।
২৭. চোগলখােরী ও মনােমালিন্যতা বর্জন করা।
২৮. হাসাদ বা হিংসা বিদ্বেষ বর্জন করা।
২৯. ক্রোধ দমন করা।
৩০. অন্যের অনিষ্ট সাধন ও প্রতারণা না করা।
৩১. দুনিয়ার অত্যাধিক মায়া-মুহাব্বত ত্যাগ করা।
৩২. কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করা।
৩৩. দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা।
৩৪. দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়া।
৩৫. আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।
৩৬. আল্লাহর যিকির করা।
৩৭. বেহুদা কথা থেকে জবানকে রক্ষা করা।
৩৮. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
৩৯. নামায কায়েম করা।
৪০. যাকাত দেয়া।
৪১. রােযা রাখা।
৪২. হজ্জ করা।
৪৩. ইতিকাফ করা।
৪৪. হিজরত করা।
৪৫. নযর বা মানত পূরা করা।
৪৬. কসম রক্ষা করা।
৪৭. কাফফারা আদায় করা।
৪৮. কুরবানী করা।
৪৯. সতর ঢাকা।
৫০. মৃত ব্যক্তির কাফন- দাফন করা।
৫১. ঋণ শােধ করা।
৫২. ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা বজায় রাখা।
৫৩. সত্য সাক্ষ্য দেওয়া।
৫৪. বিবাহের দ্বারা চরিত্র রক্ষা করা।
৫৫. পরিবার বর্গের হক আদায় করা।
৫৬. পিতা-মাতার খেদমত করা।
৫৭. সন্তান লালন-পালন করা।
৫৮. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা।
৫৯. মনিবের ফরমাবরদার হওয়া।
৬০. ন্যায়বিচার করা।
৬১. সমাজের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
৬২. রাষ্ট্র প্রধানের আনুগত্য করা।
৬৩. দুপক্ষের কলহ মিটিয়ে দেয়া।
৬৪. সৎকাজে পরস্পরে সাহায্য করা।
৬৫. সৎ কাজের আদেশ করা ।
৬৬. অসৎ কাজে বাধা দেওয়া।
৬৭. হদ বা ইসলামী দন্ডবিধি বাস্তবায়ন করা।
৬৮. জিহাদ করা বা দ্বীন জারী করার জন্য যথাসাথ্য চেষ্টা করা।
৬৯. আমানতদারী রক্ষা করা।
৭০. মানুষকে করজে হাসানা দেওয়া।
৭১. পাড়া- প্রতিবেশীদের সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৭২. অর্থ-সম্পদের সদ্ব্যবহার করা।
৭৩. সালামের উত্তর দেয়া।
৭৪. হাঁচিদাতার উত্তর দেয়া।
৭৫. কাউকে কোন কষ্ট না দেয়া।
৭৬. অবৈধ খেলাধূলা ও রঙ-তামাসা না করা।
৭৭. রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেয়া।

মন্তব্য করুন

নবীনতর পূর্বতন