Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

ঈমানের জোর - ইসলামিক গল্প

ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্পের বই pdf | ইসলামিক গল্প থেকে শিক্ষা | মেয়েদের ইসলামিক গল্প | স্বামী স্ত্রীর রােমান্টিক ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্প ও কাহিনী | ছােটদের ইসলামিক গল্প | ইসলামিক গল্প ও কাহিনী pdf | ইসলামিক গল্পের লিংক | শিশুদের ইসলামিক গল্পের বই pdf | ইসলামিক গল্পের বই | ছােটদের ইসলামিক গল্পের বই pdf | Bongotweet.com

আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগের কথা। তখন মানুষ আল্লাহর নবীদের কথা মেনে চলতাে। মানুষ সত্য কথা বলতাে। ওয়াদা পালন করতো। বনি ইসরাইলে এমনি এক লােক বাস করতাে। নাম রুবায়া। সে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াতাে আর বন্দরে বন্দরে ব্যবসা করতাে। একবার বাণিজ্যে যাবার আগে কিছু স্বর্ণমুদ্রার টান পড়লো। ভেবে দেখলাে, কারাে কাছ থেকে ধার নেয়া ছাড়া গতি নেই। তখনি তার মনে পড়লাে উদার হৃদয় সােলায়মানের কথা।

পরদিন সকালে সে সােলায়মানের বাড়ি গিয়ে হাজির হলাে। সালাম বিনিময়ের পর সােলায়মান তার আগমনের কারণ জানতে চাইলেন। রুবায়া বলল, বাণিজ্যে যাচ্ছি, মালামাল কেনার জন্য আরাে কিছু স্বর্ণমুদ্রা দরকার। আপনি যদি একহাজার স্বর্ণমুদ্রা ধার দেন তবে এক বছর পর তা শােধ করে দেবাে।

সােলায়মান বললেন, "ধার দিতে সমস্যা নেই, তবে জামিনদার দরকার।"

রুবায়া বলল, আমার জামিনের জন্য একমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট। রুবায়া যেমন পাক্কা ঈমানদার, সােলায়মানও তাই। রুবায়ার কথা শুনে বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আল্লাহই জামিনের জন্য যথেষ্ট।

এ কথা বলে রুবায়াকে সােলায়মান এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ধার দিল।

যথাসময়ে জাহাজে চড়ে বিদেশে পাড়ি জমালাে রুবায়া। বন্দরে বন্দরে ব্যবসা করে প্রচুর লাভ করলাে। ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কেটে গেল প্রায় পুরােটা বছর। স্বর্ণমুদ্রা ফেরত দেয়ার দিন ঘনিয়ে এলো। বাড়ি ফেরার জন্য বন্দরে এলাে রুবায়া। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরার মত কোন জাহাজ পেলাে না। জলপথ ছেড়ে স্থলপথে বাড়ি ফিরতে চাইল, কিন্তু কোন যানবাহন জোগাড় করতে পারল না। অনেক চেষ্টা করেও সে যখন দেখলাে সময় মত বাড়ি ফেরার কোন উপায় নেই তখন ওয়াদাভঙ্গের আশংকায় সে অস্থির হয়ে পড়লাে। কি করা যায় ভাবতে গিয়ে তার মাথায় এক অভিনব বুদ্ধি এলাে। রুবায় একটুকরাে কাঠ ছিদ্র করে তাতে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ও একটি চিঠি ভরলাে। এরপর শক্ত করে ছিদ্রমুখ বন্ধ করে সে গেল সাগর পাড়ে।

আরও পড়ুনঃ

তীরে দাঁড়িয়ে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাে, হে আল্লাহ, তুমি জানাে আমি সােলায়মানের কাছ থেকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ধার নিয়েছি। সে জামিন চাইলে আমি তােমাকেই জামিন মেনেছিলাম। নির্দিষ্ট দিনে বাড়ি যাওয়ার জন্য আমি কোন যানবাহন পাচ্ছি না। তাই তােমার ওপর ভরসা করে স্বর্ণমুদ্রার এই কাঠের টুকরাটি সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছি। তুমি সময়মত এটি তার হাতে পৌঁছে দিও।

রুবায় এ কথা বলে কাঠের খন্ডটি সমূদ্রে ফেলে দিল। এরপর সে আবার বাড়ি ফেরার যানবাহন খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাে।

এদিকে নির্দিষ্ট দিনে সােলায়মান বন্দরে এসে রুবায়ীকে তালাশ করলো। তাকে না পেয়ে মন খারাপ করে বাড়ি ফেরার পথে সমুদ্র তীরে একখন্ড কাঠ দেখতে পেলাে। কাঠটি রান্নার কাজে লাগবে ভেবে সে ওটা নিয়ে বাড়ি ফিরল। কুড়াল দিয়ে কাঠটি কাটতে গেলে বেরিয়ে এলো এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা ও চিঠি। সােলায়মান চিঠিটা পড়লাে। জানতে পারলাে রুবায়া তার জন্যই এ স্বর্ণমুদ্রাগুলাে পাঠিয়েছে।

কিছুদিন পরের কথা। রুবায়া দেশে ফিরে এলাে। বাড়ি ফিরেই সে গেল সােলায়মানের বাসায়। সোলায়মান তাকে সমাদর করে শরবত নাস্তা খেতে দিল। খেতে খেতে রুবায়া বলল, বিশ্বাস করুন, নির্দিষ্ট দিনে আপনার পাওনা ফিরিয়ে দিতে আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন জাহাজ না পাওয়ায় সময়মত ফিরে আসতে পারিনি। এই নিন আপনার স্বর্ণমুদ্রা। আমাকে দেনার দায় থেকে মুক্তি দিন। রুবায়া স্বর্ণমুদ্রার থলে সােলায়মানের দিকে বাড়িয়ে ধরলাে। সােলায়মান বলল, ‘এক পাওনা আমি কয়বার নেবাে? নির্দিষ্ট দিনেই আমি আপনার পাঠানাে স্বর্ণমুদ্রা ও চিঠি পেয়েছি। আমি আল্লাহর শােকর করছি এ জন্য যে, প্রকৃত ঈমানদারকে আল্লাহ এভাবেই সহায়তা করেন। রুবায়াও আল্লাহর শোকর আদায় করে খুশি মনে। বাড়ির পথ ধরলাে।

গল্প থেকে শিক্ষাঃ এই গল্প থেকে আমরা জানতে পারলাম, আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকলে আল্লাহ কাউকে নিরাশ করেন না। মুমিন কখনাে। ওয়াদা খেলাফ করেন না।

নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখুন :